ছোটবেলা থেকেই পাখি পোষাটা ছিলো শখ। বড় হয়ে বিয়ের পরও নানা ধরনের পাখি পুষতেন ধামরাইয়ের মো. রকিবুল ইসলাম রাকিব (৪০) নামের এক ব্যক্তি।
বিয়ের পর জানতে পারেন তার স্ত্রী রোকেয়া আক্তারের শখ পাখি পোষা। স্বামী-স্ত্রী মিলেই বাসায় পাখি পুষতেন শখের বসে। তার পর হঠাৎ করেই এই শখটিই পেশায় পরিবর্তন করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন রাকিব ও রোকেয়া দম্পতি।
প্রথমে রাকিব রোকেয়া দম্পতি দেড় লক্ষ টাকা পুঁজি নিয়ে ধামরাই থানা সংলগ্ন উত্তর পাশে ‘মা পাখি ঘর’ নামে একটি পাখির দোকান দিয়েছেন।
সেখানে কবুতর লক্ষা, শিরাজী, রেসার, গিরিবাজ, ট্রামপোর্টার বুখরা, কাঘজি, হুমা জাতির কবুতর ও লাব্বাক, বাজরিগার, মুনিয়া, কোকাতেল, টিয়া, কোয়েলসহ বিভিন্ন রঙের ঘুঘুসহ নানান জাতের পাখি তুলেছেন এই দোকানে। পাখি ছাড়াও পাখির খাঁচা ও সব ধরনের খাবারও বিক্রি করেন।
পাখি কিনতে আসা আয়শা আক্তার জানান, আমার ছেলের জন্য একটি পাখি কিনতে আসছি । লকডাউনের কারণে স্কুল বন্ধ। তাই বায়না ধরেছে তাকে একটি পাখি কিনে দিতে হবে। এখানে নতুন দোকান হয়েছে শুনেই পাখি কিনতে আসলাম। পছন্দ হলেই একটি নিয়ে যাবো।
মনোয়ার জানান, এ রাস্তা দিয়েই থানার দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ চোখে পড়লো অনেক গুলো পাখি। পরে দোকানটির কাছে এসে পাখি গুলো দেখছি। এত সব পাখি দেখে খুবই ভালো লাগছে।
রকিবুল ইসলাম রাকিব একটি কারখানায় চাকরি করাতে পাখি বিক্রির কাজটি স্ত্রী রোকােয়া আক্তারই করে থাকেন। মা পাখি ঘরে ছয়শ থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায় বিভিন্ন জাতির পাখি।
আর ১৫০ টাকা থেকে ১৬‘শ টাকার মধ্যে বিক্রি করেন পাখির খাঁচা। এখানে পাখির ওষুধ ভিটামিনসহ প্রায় ২০ প্রকারের খাবারও বিক্রি করেন।
রোকেয়া আক্তার জানান, আমার বিয়ে হওয়ার পর থেকেই দেখেছি আমার স্বামীর পাখি পোষার খুব শখ। আমারো ভালো লাগতো। আমাদের বাসাতেই কয়েক বছর ধরে পাখি পোষা হয়। পাখির প্রতি আমার একটা অন্যরকম টান ছিল। আমি বাসায় এমনিতেই বসে থাকি।
পরে দুজনের পরামর্শেই এই পাখির দোকান দেয়া হয়েছে। আমার স্বামী চাকরি করেন। যার জন্য আমিই এই কাজটি করি। এটা করতে আমার খুব ভালো লাগে।
পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ সারাক্ষণ কানে বাজে। এটা একটা অন্যরকম অনুভূতি। তবে কখন যে পাখি পোষার শখটি পেশায় পরিনত হয়ে গেছে বুঝতেই পারলাম না।
রকিবুল ইসলাম রাকিব জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে থাকতেই শখ হিসেবে পাখি পুষতাম। বিয়ে করার পরও পাখি পোষা বাদ দেইনি। সেই শখ থেকেই এখন একটি দোকান দিয়েছি।
পাখি বিক্রির দোকান দিয়েছি তিন মাস হয়। দোকান দেয়ার পর প্রতি মাসেই এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার পাখি ও খাবার বিক্রি হচ্ছে।
লকডাউনের কারণে ঢাকায় যেতে পারি না। লকডাউন শেষ হলে দোকানে আরও অনেক প্রকার পাখি আনতে হবে। তবে চাকরির পাশাপাশি শখের দোকান থেকে এখন অতিরিক্ত প্রতি মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে আমার।