শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ । ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাসপাতাল ছাড়লো ‘বিশ্বের সবচেয়ে ছোট শিশু’

অনলাইন ডেস্ক »

নিউজটি শেয়ার করুন

মাত্র ২১২ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্ম নেয় ‘বিশ্বের সবচেয়ে ছোট শিশু’খ্যাত সিঙ্গাপুরের কওয়েক ইউ সুয়ান। জন্মের পরপরই হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয় তাকে। দীর্ঘ ১৩ মাস সেখানে থাকার পর অবশেষে বাবা-মার সঙ্গে নিজ বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে সে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, কওয়েক ইউ সুয়ান যখন জন্ম নেয় তখন তার ওজন ছিল একটি আপেলের সমান। পা থেকে মাথা পর্যন্ত তার শরীরের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ২৪ সেন্টিমিটার। তার মা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ২৫ সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে তাকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ করানো হয়। একটি সন্তানকে মায়ের পেটে পূর্ণতা পেতে গড়ে সময় লাগে ৪০ সপ্তাহ।

চিকিৎসকরা জানান, কওয়েক ইউ সুয়ানের মায়ের গর্ভাবস্থায় ‘প্রি-ইক্লাম্পসিয়া’ নামের ভয়াবহ উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে। এর ফলে তার মায়ের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি ছিল, যা মা ও গর্ভস্থ শিশু উভয়ের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারতো। তাই নির্ধারিত সময়ের চার মাস আগেই জরুরি সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। ভূমিষ্ঠ হয় কওয়েক ইউ সুয়ান। হাসপাতালে রাখা হয় তাকে। নিবিড় পরিচর্যায় ১৩ মাস পর এখন তার ওজন বেড়েছে অনেক। তার ওজন এখন ৬.৩ কিলোগ্রাম।

সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন, এই শিশুটির বেঁচে থাকার সুযোগ ছিল খুবই সীমিত। কিন্তু সব প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে, তার জন্মের সময় যেসব জটিলতা ছিল, তাকে পিছনে ফেলে চারপাশের সবাইকে আশান্বিত করেছে শারীরিক বৃদ্ধি এবং বেঁচে থাকার মাধ্যমে। এর ফলে সে হয়ে উঠেছে করোনা ভাইরাসের মধ্যে এক ব্যতিক্রমী শিশু। এই মহামারির মধ্যে সে হলো আশার আলো।

হাসপাতালে থাকার সময় বহুবিধ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে কওয়েক ইউ সুয়ানকে। বেঁচে থাকতে তাকে নির্ভর করতে হয়েছে নানা রকম মেশিনের ওপর।

চিকিৎসকরা জানান, তাদের তত্ত্বাবধানে তার স্বাস্থ্যগত এবং অন্যান্য অগ্রগতি হয়েছে। এতে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এখনও তার ফুসফুসে জটিল সংক্রমণ আছে। এক্ষেত্রে বাসায় নিয়ে তাকে শ্বাসপ্রশ্বাসে সহায়তা করতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে সুস্থ হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

কওয়েক ইউ সুয়ানের মা ওং মেই লিং স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন, কওয়েক ইউ সুয়ানের জন্ম এবং তার আকৃতি তার কাছে ছিল হতাশার। পুরো চিকিৎসায় তাদের মোট খরচ মেটানো হয়েছে অর্থ সংগ্রহ বিষয়ক প্রচারণার মাধ্যমে। এভাবে তারা সংগ্রহ করেছেন ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮৮৪ সিঙ্গাপুরি ডলার যা মার্কিন ২ লাখ ৭০ হাজার ৬০১ ডলারের সমান।

আপনার মন্তব্যটি লিখুন
শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »