বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ । ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুরআন শরিফ ও রমজানুল মুবারক সম্পর্কে কিছু ভাবনা

সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম »

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা, বরকতময় মাসটি চলে এসেছে। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে এই বরকতময় মাস থেকে পরিপূর্ণ ফায়দা হাসিল করার তৌফিক দান করুন।

এই পবিত্র মাসে কুরআন প্রথম নাজিল হবার কারণে এটিকে কখনও কখনও কুরআনের মাস বলা হয়। তাওরাত, ইঞ্জিল এবং যরের মতো পবিত্রগ্রন্থগুলোও এই মাসেই অবতীর্ণ হয়েছে। এজন্য সারা মাস ধরে তারাবিহর নামাজে কুরআন শোনাকে ওয়াজিব করা হয়েছে। বিশ্বের মুসলমানগণ অন্তত এই মাসটিতে অত্যন্ত উৎসাহ ও শ্রদ্ধার সাথে কুরআন তিলাওয়াত করেন। আর এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, একারণে বান্দাদের জন্য রয়েছে অশেষ আধ্যাত্মিক পুরস্কার!

আরবি ভাষাভাষি ছাড়া ‘অনারব’ বিশ্বের কয়জন এই কুরআন তিলাওয়াত বোঝেন? সর্বোচ্চ ২-৩ শতাংশ হবেন! আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, কুরআন বলছে- এটি দিকনির্দেশনার গ্রন্থ। আমরা যেনো এটি বুঝে পড়ি এবং সেই অনুযায়ী আ’মাল করি। কুরআন আমাদেরকে এটির অর্থ নিয়ে চিন্তা করতে বলে। কুরআনের বহু জায়গায় এসেছে, “তোমরা কি বোঝো না?” “তোমরা কি দেখো না?” ইত্যাদি। আমাদের মধ্যে কয়জন এই আমালগুলো করছি? কুরআন যদি বুঝতেই না পারি, তো এটি অনুযায়ী আমাল করবো কী করে? আর কুরআনের উপর যদি আ’মালই না করি, তো এর থেকে ফায়দা হাসিল করবো কিভাবে?

ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলামে আসা শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্ম কবুল করেছেন তাঁদের নিজেদের ভাষায় কুরআন পড়ে। এই ধর্মান্তরিত মুসলিমগণ জন্মসূত্রে যাঁরা মুসলমান, তাঁদের চেয়ে ধর্মের দিক দিয়ে বেশি শক্তিশালী, যদিও জন্মসূত্রে হওয়া মুসলমানগণ সুন্দর করে তিলাওয়াত করতে পারলেও কুরআন সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানেন না!

কুরআন বুঝতেন না— এমন লাখ লাখ মুসলমান কবরে চলে গেছেন? একই পথের পথিক আরও কতই না! ধর্মের এই

অবক্ষয় নিয়ে কিছু কি করা উচিৎ নয়? কুরআনকে বোঝার মাধ্যমে কতোই না বাড়তি ফায়দা হাসিল করা যেতো!

আসুন, কুরআনের এই বরকতময় মাসে আমরা নিচের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবি: (ক) প্রতিজ্ঞা করি যে, আরবি শিখবো যাতে আমরা কুরআন থেকে সরাসরি উপকৃত হতে পারি;

(খ) যদি আমি উপরের কাজটি করতে না পারি; তাহলে কমপক্ষে আমি যে ভাষা বুঝি, সেই ভাষাতেই আজ থেকে কুরআন পড়া শুরু করি;

(গ) কেউ যদি কুরআন পড়তে অক্ষম হই, তাহলে এমন কাউকে খুঁজে বের করি: যিনি রোজানা কিছুটা করে হলেও আমাকে কুরআন পড়ে শোনাবেন; (ঘ) যাঁদের আলিম হবার সৌভাগ্য হয়েছে, তাঁরা নিজের বিবি-বাচ্চাদের জন্য ঘরেই কুরআনের অনুবাদ করা শুরু করি;

(ঙ) উলামায়েকেরাম সাধারণ মুসুল্লিদের প্রতিদিন মসজিদে কুরআনের অনুবাদ পড়ে শোনাই

(চ) প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ হাফিজে কুরআন তৈরি হন, অথচ তাঁদের অধিকাংশই জানেন না যে তাঁরা কী মুখস্ত করেছেন! তাই হিফজ মাদ্রাসাগুলোর উস্তাদদের প্রতি সবিনয় দরখাস্ত, আপনারা ছাত্রদের সহজ-সরল ভাষায় কুরআনের অর্থ ও অনুবাদ শেখানোর জন্য রোজানা কমপক্ষে একটি ক্লাশ করান।

আসুন, আজ থেকেই শুরু করি— যাতে আমরা এই পবিত্র রমজান থেকে বরকত হাসিল করতে পারি। আল্লাহ আমাদের উপরোক্ত বিষয়গুলোর উপর আ’মাল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

দু’আর আরজ করছি। ওয়াসসালাম।

আপনার মন্তব্যটি লিখুন
শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »