বৃহঃস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ । ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানির সংকটে গুলশানবাসী!

আরিফুর রহমান »

নিউজটি শেয়ার করুন

পানি প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। নাগরিকদের জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ অথরিটির (ওয়াসা) কার্যকর ভূমিকাই প্রত্যাশিত। কিন্তু সঠিকভাবে দায়িত্বপালনে ব্যর্থ হওয়ার কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানি দিতে পারছেন না প্রতিষ্ঠানটি। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা গুলশান-২ এ পানি সংকট দেখা দিয়েছে। টানা দুই সপ্তাহের মত একালার মানুষ কোন পানি পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

এলাকাবাসী বলছেন, ঢাকা ওয়াসার আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। এ ছাড়া ওয়াসার দাবি, গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া উৎপাদনও কিছুটা কমে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গুলশান-২ এবং শাহজাদপুর আশপাশের এলাকায় গত ১০ দিনের বেশি সময় ধরে পানি পাচ্ছে না। এসব এলাকার মানুষ পানির অভাবে ভোগান্তিতে দিনযাপন করছে। পানি না পেয়ে মানুষ ওয়াসার স্থানীয় অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানালেও ঠিক হচ্ছে না।

গুলশানের স্থানীয় বাসিন্দা মীর আবদুল আলীম ভোরের পাতাকে বলেন, গত ১০ দিন যাবত ধরে পানি সরবরাহ নেই। সংশ্লিষ্টদের কাছে বারবার অভিযোগ করেও কেউ সাড়া দিচ্ছে না। প্রায়ই ওয়াসার গাড়ি থেকে পানি কিনে নিতে হচ্ছে। কেনা পানিও আবার সবসময় পাওয়া যাচ্ছে না।
ইমরান হোসেন নামের একজন স্থায়ী বাসিন্দা জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরেই পানির সমস্যা নিয়ে আছি। বাধ্য হয়ে ওয়াসা থেকে পানি কিনতে হেল্প লাইনে কল করি। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পানির এতটাই সংকট যে এখন ওয়াসার পানি কিনতেও পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পানির সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। ওয়াসার পানির পাইপ বসানোর কাজ চলমান থাকায় কোথাও কোথাও পানির সংকট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই। রাজধানীর ধানমন্ডি, আদাবর, শেখেরটেক, মেহেদীবাগ, মনসুরাবাদ, মিরপুর কাজীপাড়া, মোহাম্মাদিয়া হাউজিংয়ে পানির সংকটের কথা জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

সাত্তার মিয়া নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বাড়ি করে বড় বিপদে আছি ভাই। পানির জন্য ভাড়াটিয়ার সঙ্গে দিনে একবার হলেও …. হচ্ছে। ওয়াসার পানি না পেলে আমি পানি কিভাবে দিব? ওয়াসাকে আমরা পানির বিল সময়মতো দেই। তবুও ঠিকঠাক পানি পাওয়া যায় না। ওয়াসার অফিসে বারবার অভিযোগ জানানো হয়েছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই। তারা বলছে, পানির স্তর নেমে গেছে। তাই এই সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি গাড়ি ওয়াসার পানির দাম ৪০০ টাকা। সেখানে ৮০০ টাকা দিয়েও আমরা পানি পাচ্ছি না। ফোন করে অর্ডার দিলেও তারা পানি নিয়ে আসে না। যেখানে বেশি দাম পায়, তারা সেদিকে যায়।

এ বিষয়ে ওয়াসার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘বৃষ্টি কম, এর মধ্যে জনসংখ্যা ও চাহিদা বাড়ায় ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নামছে। এ ছাড়া লোডশেডিংসহ বিভিন্ন কারণে উৎপাদনও কিছুটা কম হচ্ছে। যার কারণে তীব্র গরমে পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সংকট তৈরি হচ্ছে কিছু জায়গায়। আমরা সমাধান করার চেষ্টা করছি। রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় এখন ২৪ ঘণ্টা পানি পাওয়া যাচ্ছে। তবে প্রচণ্ড গরমে লোডশেডিং হচ্ছে, এতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় কিছু জায়গায় সমস্যা হতে পারে।’

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

আপনার মন্তব্যটি লিখুন
শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »